প্রিন্ট এর তারিখঃ Nov 22, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Sep 25, 2025 ইং
মানবতার জন্য এক উজ্জ্বল নাম ‘রবিন’: ১৪ বার রক্তদানের গৌরবময় যাত্রা

এই সমাজে যখন অনেকেই নিজের ব্যস্ত জীবন নিয়ে মগ্ন, তখন কিছু মানুষ আছেন যারা নীরবে-নিভৃতে মানুষের জন্য নিজেদের সময়, শ্রম, এমনকি রক্ত পর্যন্ত বিলিয়ে দেন। তেমনই একজন তরুণের নাম রবিন। বয়সে তরুণ হলেও মন-মানসিকতায় পরিপক্ক এই যুবক ইতিমধ্যেই ১৪ বার রক্তদান করে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
রবিনের রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ (B+), তিনি কখনো নিজের রক্তের প্রয়োজনের কথা চিন্তা না করে বরং বরাবরই অন্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, পরিচিত-অপরিচিত বহু মানুষ যখন জরুরি রক্তের সংকটে পড়েছে, তখন রবিন সবার আগে এগিয়ে গেছেন। কখনো রাত-বিরাতে, আবার কখনো দূরদূরান্তে গিয়ে তিনি রক্তদান করেছেন।
তাঁর এই মানবিক ও নিঃস্বার্থ কর্মকাণ্ডে রানীনগর অর্গানাইজেশন বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। রবিন সর্বশেষ তাঁর ১৪তম রক্তদান সম্পন্ন করেছেন এই সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “রবিনের মতো স্বেচ্ছাসেবীরা আমাদের সমাজের বাতিঘর। তিনি কেবল একজন রক্তদাতা নন, বরং আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস।”
রবিনের সাথে কথা বললে পাওয়া যায় এক অসাধারণ মানসিকতার প্রতিফলন। তিনি বলেন,
> “প্রতিবার রক্ত দেওয়ার পর যখন জানতে পারি আমার রক্তে কেউ নতুন জীবন পেয়েছে, তখন মনে হয়, জন্মটাই সার্থক। এটা আমার কোনো দান নয়, এটা আমার কর্তব্য। মানবতা বাঁচুক, এটাই চাওয়া।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ বছরে অন্তত তিন থেকে চারবার নিরাপদভাবে রক্ত দিতে পারেন, এবং এর মাধ্যমে বহু জীবন বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু এখনো সমাজে অনেকেই রক্তদানে ভীত, অজ্ঞ কিংবা উদাসীন। এর বিপরীতে রবিন প্রমাণ করে দিয়েছেন: রক্তদান মানে শুধু রক্ত দেওয়া নয়, এটি একটি জীবনদায়ী কর্ম।
রক্তদান জীবনদানের সমান, এই চেতনায় রবিন হয়ে উঠেছেন আগামী প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল পথপ্রদর্শক। তাঁর মতো তরুণরাই সমাজকে এগিয়ে নেয়, গড়ে তোলে সহানুভূতির এক মানবিক বাংলাদেশ।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ খবর পোস্ট